HSC ICT | অধ্যায় ১ | যশাের বাের্ড-২০১৭
প্রশ্ন নং-১৪: যশাের বাের্ড-২০১৭
জনাব শিহাব একজন বৈমানিক। তিনি কম্পিউটার মেলা থেকে ১ টেরাবাইটের একটি হার্ডডিস্ক কিনলেন। এটির আকার বেশ ছােট দেখে তিনি অবাক হলেন। প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বিভিন্ন ডিভাইসের আকার ছােট হয়ে আসছে। বিমান চালনা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন এসেছে। এখন সত্যিকারের বিমান ব্যবহার না করে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বিমান পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
(ক) বিশ্বগ্রাম কী?
(খ) তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ব্যবহারে নৈতিকতা ব্যাখ্যা কর।
(গ) উদ্দীপকে ছােট আকারের হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে তার বর্ণনা দাও।
(ঘ) বিমান চালনা প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত বর্তমান প্রযুক্তিটি নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। ব্যাখ্যা কর।
(ক)-এর উত্তর:
বিশ্বগ্রাম: গ্লোবাল ভিলেজ বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সামাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।
(খ)-এর উত্তর:
নৈতিকতা হচ্ছে মানুষের কাজ-কর্ম, আচার-ব্যবহারের সেই মূলনীতি যার উপর ভিত্তি করে মানুষ একটি কাজের ভাল বা মন্দ দিক বিচার বিশ্লেষণ করতে পারে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার সমাজের সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করা শুরু করেছে। এর ফলে কম্পিউটার ও সাইবার অপরাধ, গােপনীয়তা, ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যতা বা আইডেনটিটি, চাকুরি, স্বাস্থ্য ও কর্ম। পরিবেশ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নৈতিকতার বিষয়টির উদ্ভব হয়েছে। তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নৈতিকতা রক্ষা করতে। পারলে কম্পিউটার অপরাধ, সাইবার অপরাধ, হ্যাকিং সফটওয়্যার পাইরেসি ইত্যাদি অপরাধমূলক ও অনৈতিক কাজের প্রবণতা অনেকাংশ হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
(গ)-এর উত্তরঃ
ছােট আকারের হার্ডডিক্সের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে তা হল ন্যানােটেকনােলজি। ন্যানােটেকনােলজি হল আধুনিক যুগের প্রযুক্তির বিস্ময়। একুশ শতকে এসে তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে যতটা না । তােলপাড় হচ্ছে তার চেয়ে বেশী আলােচনা হচ্ছে ন্যানােটেকনােলজি নিয়ে। ন্যানাে টেকনােলজি বা ন্যানাে প্রযুক্তি হলাে পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস (যেমন— রােবট) তৈরি করার জন্য ধাতব ও বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানাের বিজ্ঞান। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে ন্যানাে টেকনােলজির একটি নিবিড় সম্পর্ক বিরাজ করছে। কারণ কম্পিউটারের অভ্যন্তরে অসংখ্যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ন্যানােমিটার স্কেলের সার্কিট দ্বারা মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি। ইন্টেল প্রসেসরে এই ন্যানােটেকনােলজির সাহায্যে সিলিকণ করে উপরে সার্কিট ডিজাইন করে যার দৈর্ঘ্য ২০০ ন্যানােমিটার। আগামী তিন বছরে এর আকার হবে ৭০ ন্যানােমিটার এবং পরবর্তী ৭ বছরে এর আকার হবে ৫০ ন্যানােমিটার। ইন্টেল কোম্পনী আশা ব্যক্ত করেছেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ন্যানােটেকনােলজি ব্যবহার করে বর্তমান সাইজের অর্ধেক সাইজের প্রসেসর তৈরি করবেন। বর্তমান হার্ডডিস্কেও ন্যানােটেকনােলজি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য এখন বাজারে টেরাবাইট সাইজের হার্ডডিস্ক পাওয়া যাচ্ছে। অথচ ব্যাপারটা ১০ বছর আগেও কল্পনা করা যেত না।
(ঘ)-এর উত্তর:
বিমান চালনায় ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলাে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা VR হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম, যাতে মডেলিং (Modelling) ও অনুকরণবিদ্যার (Simulation) প্রয়ােগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযােগ স্থাপন বা উপলব্ধি করতে পারে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে অনুকরণকৃত পরিবেশ হুবহু বাস্তব পৃথিবীর মত হতে পারে। এক্ষেত্রে অনেক সময় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় অনুকরণকৃত বা সি্যুলেটেড পরিবেশ বাস্তব থেকে আলাদা হতে পারে। উন্নত বিশ্বের বাণিজ্যিক বিমান সংস্থা কিংবা সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিমান পরিচালনা প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করছে। এজন্য ফ্লাইট সিমুলেটর ব্যবহার করা হয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কৌশল প্রয়ােগের মাধ্যমে ফ্লাইট সিমুলেশনের ক্ষেত্রে স্বল্প খরচে বিমান চালকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হয়। নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা যায়। নগর পরিকল্পনায় ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর প্রয়ােগ ঘটিয়ে নগর উন্নয়ন রূপরেখা, নগর যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি সহজ ও আকর্ষনীয়ভাবে বর্ণনা করা যায়। স্থপতিগণ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে কোন ভবনের নকশা তৈরি করে বাস্তবে ভবন নির্মাণের পূর্বেই তার কাল্পনিক রূপদান করতে পারেন। ফলে ভবন কিরূপ হবে তা দেখা যায়। এবং কোন ত্রুটি থাকলে তা সহজেই ধরা পড়ে ।