HSC ICT | অধ্যায় ১ | ঢাকা বোর্ড-২০১৭
প্রশ্ন নং-১১: ঢাকা বোর্ড-২০১৭
ভিনকু নামে জাপানের এক প্রযুক্তি কোম্পানী ডিজিটাল প্রযুক্তির কৃত্রিম গৃহকর্মী তৈরি করেছে যার নাম দেওয়া হয়েছে হিকারি। এই গৃহকর্মীকে দেখা যাবে হলোগ্রাফিক পর্দায়। হিকারী তার গৃহকর্তাকে ঘুম থেকে জাগানাে, গুড মনিং বলা, অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন বার্তা পাঠানাের কাজও করবে। রাফি সদ্য পড়াশুনা শেষ করে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে যােগদান করেছে। যেহেতু যে বাসায় একা থাকে তাই মাঝে মাঝে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়। সেজন্য সে একটি হিকারি কেনার সিদ্ধান্ত নিলেন। যেহেতু হিকারীর দাম বেশি। তাই বাসা থেকে চুরি না হয় সেজন্য বাসার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তা করলেন যাতে পরিচিত ব্যক্তির নির্দিষ্ট বাটনে আঙুলের ছাপ দিয়ে বাসায় প্রবেশ করতে পারবে। যদিও নিরাপত্তার জন্য তার অফিসের টাকার জেটে প্রবেশের জন্য মাইক্রোফোনে কথা বলে প্রবেশ করতে হয়।
(ক) ক্রায়ােসার্জারী কী?
(খ) আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
(গ) উদ্দীপকের হিকারি তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর।
(ঘ) উদ্দীপকে রাফির বাসা ও অফিসে নিয়গিত্তা ব্যবস্থা ফৌশলের মধ্যে কোনটি বেশী উপযােগী বিশ্লেষণপূর্বক তােমার মতামত দাও।
(ক)-এর উত্তর
ক্রায়ােসার্জারি: ক্রায়ােসার্জারি হচ্ছে এক প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রা প্রয়ােগ করে ত্বকের অস্বাভাবিক এবং রােগাক্রান্ত টিস্যু ধ্বংস করা হয় ।
(খ)-এর উত্তরঃ
আণবিক পর্যায়ে গবেষণার প্রযুক্তিটি হলে ন্যানাে প্রযুক্তি। ন্যানাে টেকনােলজি বা ন্যানাে প্রযুক্তি হলাে পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস (যেমন- রােবট তৈরি করার জন্য ধাতব ও বন্ধুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানাের বিজ্ঞান। ন্যানােসায়েন্স এবং ন্যানাে টেকনােলজি হলাে একক অণু-পরমাণু দেখা এবং নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য । ন্যানাে প্রযুক্তির ফলে কোনাে উপকরণকে এতটাই ক্ষুদ্র করে তৈরি করা যায় যে, এর থেকে আর ক্ষুদ্র করা সম্ভব নয়।
(গ)-এর উত্তর:
হিকারি তৈরীতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলাে রোবটিক্স। টেকনােলজির যে শাখায় রােবটের নকশা, গঠন ও কাজ সস্পর্কে আলােচনা করা হয় সেই শাখাকে রােবটিক্স বলা হয়। উদ্দীপকের হিকারি একধরনের রােবট। “রোবট হচেছ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা; যা মানুষ যেভাবে কাজ করে তা সেভাবে কাজ করতে পারে অথবা এর কাজের ধরন দেখে মনে হবে এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে।” রােবটে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়। কম্পিউটার রােবটের সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে ।। সকল রােবটের কাজের ধারা পূর্ব থেকে ঠিক করে দেওয়া থাকে। রােবট শুধুমাত্র তাকে নির্দেশিত কাজের ধারা পূর্ব থেকে ঠিক করে দেওয়া থাকে। রােবট শুধুমাত্র তাকে নির্দেশিত কাজের ধারা অনুযায়ী সাড়া দিয়ে থাকে । প্রত্যেকটি কাজের জন্য আলাদা ভাবে নির্দেশনা রােবটের মেমরিতে তৈরি করে দিতে হয়।
(ঘ)-এর উত্তর:
রাফির অফিসে নিরাপত্তার জন্য ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে প্রথমে সকল ব্যবহারকারীর কণ্ঠকে কম্পিউটার প্রােগ্রামিং এর সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রূপান্তর করে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তিতে ভয়েস রেকর্ডারের সাহায্যে ব্যবহারকারীর ভয়েস রেকর্ড করা হয়। অতঃপর প্রােগ্রামের সাহায্যে উভয়ের তুলনা করে সনাক্ত করা হয়। অন্যদিকে রাফির বাসার নিরাপত্তার জন্য যে প্রযুক্তিটির কথা ভাবছিলেন তাহল ফিংগার প্রিন্ট এর জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট রিভার ব্যবহৃত হয়। ফিংগার প্রিন্ট রিডার হচ্ছে বহুল ব্যবহৃত একটি বায়ােমেট্রিক ডিভাইস যার সাহায্যে মানুষের আঙ্গুলেরছাপ বা টিপসইকে ইনপুট হিসাবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ফিংগার প্রিন্ট বায়ােমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা পূর্বেই ব্যবহারকারীর আঙ্গুলের ছাপ ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তীতে এই রিড়ার আঙ্গুলের নীচের অংশের তুকে রীড় করে সংরক্ষিত ছাপের সাথে তুলনা করে। ব্রিয়েটি ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নীচের রক্ত সঞ্চালনের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোমেগনেটিক পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতির সুক্ষতা তুলনামূলকভাবে কম। অসুস্থতা জনিত কারণ যেমন: ঠান্ডা, সর্দি, কাশি ইত্যাদি ফলে কোন ব্যবহারকারীর কণ্ঠ পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে অনেক সময় সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না । কম্পিউটার বা জয়েস রেকর্ডার ব্যবহার করে কোন ব্যক্তির জয়েন নকল করা সহজ; ফলে এই পদ্ধতি নিরাপদ নয়। অন্যদিকে ফিংগার প্রিন্ট পদ্ধতিতে সনাক্তকরনে খুব কম সময় লাগে। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারে খরচ তুলনামূলক কম এবং সফলতার পরিমাণও শতভাগ। তাই বলা যায় , রাফির বাসা ও অফিসের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার মধ্যে বাসার নিরাপার কৌশলটি অধিক উপযােগী।